সাধারণ কবিতা অসাধারণ কবিতা ।। জাহেদ সরওয়ার
ফরাসিতে তখন গিয়ঁম আপলিনের নেতৃত্বে আঁভ গার্দ কবিতার ঢেউ। আপলিন ও রবার্ট ডেলনের বাসাতে চলতো তখনকার কবিতা পাঠের আসর। নিয়মিত আসর জমাচ্ছেন ম্যাকস জাকব, আঁদ্রে সালমঁরা। তারাই তখন সমকালীণ ফরাসি কবিতার অগ্রদূত। সেদিন কবিতা পড়বেন এক নবাগত কবি। নাম তার ব্লেইজ সঁদ্রার। ভাষা ফরাসি হলেও সুইস। আপাদমস্তক ভবঘুরে। সিনিয়রদের সম্পর্কে পুরামাত্রায় শ্রদ্ধাহীন, কবিতার যাবতীয় প্রচলিত ধারণার বিরুদ্ধে স্বোচ্ছার। সিনেমা দেখেন প্রচুর সেখান থেকেই উদ্দিপনা পান খানিকটা। মুখে ‘ইনার পোয়েট্রি’র তুফান। রাশিয়া আমেরিকা ঘুরে এই প্রথম পারিতে পা। কবিতা পড়বার আগে কবিতাকে কবিতামুক্ত ও সাধারণ শব্দের ব্যবহার সম্পর্কে তার নতুন আইডিয়া শোনে ডেলন মন্তব্য করেন ‘তুমিতো মিয়া সেই পুরানা ধারণার গায়েই টেকনিকের জামা পরাইতে চাইতেছো’।
সঁদ্রার রেগে গিয়ে বলেন ‘তোমরা মিয়া আধুনিকরা শোনো। ইমেজ আর ইমাজিনেশানের বন্ধ্যাত্বের ভেতর কবিতারে হত্যা করতে চাচ্ছো। যতক্ষণ না এ সমস্ত ধার করা জিনিস ফাটিয়ে না দিচ্ছো ততক্ষণ নতুন কবিতা সম্ভব না।
কবিতা পড়ছে সদ্রার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘরে শ্রোতাদের ভেতর চাপা উত্তেজনা। সবাই বুঝতে পারছে কী ধুন্ধুমার কান্ড ঘঠতে যাচ্ছে কবিতায়। প্রচলিত শব্দে কি এক স্পন্দন। আপলিন বুঝতে পারলেন নতুন কবিতা কাকে বলে। তাদের নতুন কবিতা আন্দোলনের পিছনেও নতুন কবিতা আছে তাহলে?
সঁদ্রারের কবিতায় রাস্তাঘাট, সড়কে নাম, শর্ট হ্যা- টাইপিস্ট, সংবাদপত্র, সাইনবোট, নেম প্লেটস, নোটিস সবকিছু ঢুকে আছে। এবং এত জীবন্তভাবে যা একমাত্র সদ্রারের দ্বারাই সম্ভব। কবিতা পড়া শেষ হলে আপলিন জড়িয়ে ধরলেন সদ্রারকে বুকের মাঝে। অনেকটা ঠাট্টার ছলে আঁদ্রে সালমঁ বললেন ‘যেন একটা ঠা-া সিদ্ধ আলু। কথা বলতে উস্তাদ। রেলওয়ে-টাইম টেবল বা গাইডবুক তার হাতে বদলে হয়ে ওঠে মর্মস্পর্শী কবিতা।
সরকার আমিনের কবিতা পড়ে ব্লেইজ সঁদ্রারের কথা মনে পড়ার কারণ তার বইয়ের নাম হয় ‘চার পাঁচ হাজার পিঁপড়ার দু:খ’ ‘ব্লেড দিয়ে কেটেছিলে জল’ ‘আত্মহত্যার পরিবর্তে ১ কাপ চা খাও’ ‘সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ’ ইত্যাদি।
সরকার আমিনের কবিতা বিচ্ছিন্নভাবে অনেক পড়েছি। অনেক কবিতা ভাল লাগে। আবার অনেক কবিতা সম্পর্কে প্রশ্নজাগে।
চার পাঁচ হাজার পিঁপড়ার দু:খ’ বইতে ‘সম্ভ্রান্ত ইঁদুর’ ‘রাগে তোমার বাড়ি’ ‘স্নান করে দেখি’ স্কচ টেপ দিয়ে হৃদয়ের মুখ বন্ধ করা যায় না’ ‘আমি কোথায়?’ কবিতাগুলো মহিমাবিস্তারকারি।
ঘাষ জানে মাটির মাতৃ পরিচয়। ঘাসের মধ্যে হৃদয় ইচ্ছা করলে লুকিয়ে রাখা যায়।
................................
ইচ্ছা করলে চিরকাল বেঁেচ থাকা যায়
তবে তার জন্য কিছুকাল ঘাসের ভেতর লুকিয়ে থাকতে হয়
অথবা ছোট গর্তে স্বল্পকাল হতে হয় সম্ভান্ত্র ইঁদুর। (সম্ভ্রান্ত ইঁদুর)
কবিতাটির মহিমা দুই কারণে প্রথমত ইঁদুরকে আমরা এক মহাধূরন্ধর প্রাণী বলেই জানি। আবার গর্তে ধ্যান করে প্রায় মহামানবরা অমর হয়েছেন। সত্য এবং স্যাটায়ারের মিলনে বিষয়ের গুরুত্ব কমেনি।
রাগে তোমার বাড়ি কবিতাটার বিষয় নিয়া অহরহ কবিতা লেখা হয়েছে। সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী অসংখ্য কবিতাই শেষ পর্যন্ত সেøাগানে পরিণত হয়েছে। এই কবিতাটার যাত্রা কেন্দ্র থেকে। যে কেন্দ্রের ব্যাস একটা পৃথিবীর সমান। কবি হৃদয়ের বহন ক্ষমতা অসীম। তাবৎ জাহানই সে বয়ে বেড়ায় প্রায় নিজের অজান্তে। কিন্তু তবুও শিকার মনোবৃত্তি বা আর কমপ্লেক্সের জটিলতা কবি হৃদয়কে ছিন্নভিন্ন করে ফেলে।
এই যুদ্ধ আমার একার পক্ষে বহন করা বেশ কষ্টের
ধার করতে চাই একটি শক্তিশালী হৃদপি-
যে পাম্প করতে জানে, থামতে জানে না।
কবি তাদেউস রোদেভিস বলেছিলেন আউৎসভিৎজের পর আর কবিতা হয় না। কবি হৃদয় মানতে না পারলেও সবসময় এইভাবে ডারউইনিয় পদ্ধতিইে চলছে প্রাণী জগত। এক দিকে যুদ্ধ অন্যদিকে অগ্রগতি।
ইরাকে রক্তপাতের পরও জাপানের সূর্য
উদিত হতে লজ্জা পায়না।
যুদ্ধ আর অগ্রগতি অসমতা না সমতা সেটা নিয়ে তর্ক মানবজাতির পতন পর্যন্ত শেষ হবে বলে মনে হয় না। আর তাই
আমার মন
মসলার মতো পিষে যাচ্ছে বন্ধুগণ
রাগে তোমার বাড়ি গুড়িয়ে দিতে ইচ্ছা করে ও আমার শ্বেতাঙ্গিনী বন্ধু
‘শ্বেতাঙ্গিনী বন্ধু’ সিম্বল ধরে যদি এগোই তবে একথা বলা যায় যে প্রথম দুুনিয়ার অধিবাসিরাতো প্রায় ধলা। বর্ণবাদের পিছনে যেমন শ্বেতাঙ্গ অন্ধকার জড়িত আবার পুঁজিবাদি সমাজ ব্যবস্থার সাথেও শ্বেতাঙ্গরাই জড়িত। সেক্ষেত্রে বর্ণবাদ আর পুঁজিবাদের খুব দূরত্ব নাই।
এরপর আমরা কবির প্লাটফর্ম বা অবস্থান সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা পাই
লাদেনের মতো নিষ্ঠুর হতে আমার আর বাকি নেই।
এখনো এই সন্দেহের বাইরে আমরা যেতে পারি নাই যে লাদেন বলে আদৌ কেউ কি আছে। যে পশ্চিমাদের বোমা আর গুলি বৃষ্টি উপেক্ষা করে তেলাপোকার মত আফগানিস্তানের পাহাড়ে বা ঝোরায় লুকিয়ে বেচে আছে। যে লোকটার ছবি মিডিয়ায় লাদেন বলে প্রচারিত সে কি আসলে লাদেন না অন্যকেউ। মধ্য এশিয়ার একচ্ছত্র আধিপত্যের জন্য পশ্চিমাদের দরকার ছিল ভয়ংকর শত্রু। তারা হতাশ যে তাদের কোনো ভয়ংকর শত্রু নাই। সমস্যা নাই আছে ঢাকডোল মিডিয়া। পশ্চিমা গণমাধ্যম এমন কাল্পনিক শত্রু সাদ্দামকে সৃষ্টি করল। যার হাছিতে পারমানবিক বিস্ফোরণ ঘঠবে। ঠিক লাদেনও একটা নাম সিম্বল। লাদেন নামের কোনো দেহের অস্তিত্বই দরকার নাই। দরকার শুধু এই নামটা যা কখনো মরবে না। মাঝে মাঝে ভিডিও ফুটেজ পাঠিয়ে পশ্চিমাদের নিশ্চিহ্ন করার হুমকি দেবে। যাইহোক এই বিনম্র কবিতাটা রাজনৈতিক কবিতা হয়েও চিরস্থায়ী মননশীল মানুষের হৃদয়কে প্রষ্ফুটিত করতে পেরেছে।
স্নান করে এসে দেখি
সমুদ্র অনেক কিলোমিটার দূরের ব্যাপার
ভিজে গেলেই সাঁতার হয় না (স্নান করে দেখি)
অথবা
টেবিলে সাজানো ছিল নানা পদের জীবন
বেছে নিতে বলা হলে
শেষ পর্যন্ত মৌনই থেকে গেছি (স্কচ টেপ দিয়ে হৃদয়ের মুখ বন্ধ করা যায় না)
অথবা
শীতে কাঁপছি।
কাতার কুয়াশা, সামনে বরফের সাঁকো
অনুমানই একমাত্র যানবাহন
আমি আন্তরিক আগুনের খোঁজে গেছি
আশেপাশের গ্রামে। (আমি কোথায়?)
ইত্যাদি ঋজু অথচ প্রায় লক্ষ্যভেদি লাইনগুলো হয়ে ওঠেছে অসামান্য কবিতা। কবিতাগুলো আত্মায় যেন মলম দেয়। শান্ত করে। সরকার আমিনের বলার কায়দাটা তরঙ্গের দোলার মতো। তিনি উচ্ছকণ্ঠি নন কিন্তু লক্ষ্যভেদি।
যাইহোক সার্বিকভাবে কবিতা যা দেখায় সিম্বল বা ইমেজের মাধ্যমে বিমূর্ত বা মূর্ত বস্তুর সাথে তা যদি সঠিক প্রতিতুলনা না ঘঠাতে পারে তাহলে কবিতা হিসাবে তা ব্যর্থ হতে বাধ্য। কারন ততক্ষণে ইমেজ আটকে গেছে বন্ধ্যাত্বের জটিলতায়। যেমন ‘তরমুজ মদ’ যখন বলা হয়। আমরা জানি মদের রঙ লাল হতে পারে। আর তরমুজকেও মদের মত তরল করে খাওয়া যায়। ফলে ইমেজটা নিতে আমাদের অসুবিধা হয় না বরং আমরা আনন্দিত হয়ে ওঠি এই প্রতিতুলনায়।
সরকারের এই বইতে বন্ধ্যা ইমেজের কারণে অনেক কবিতা বলা যায় অর্থহীনতায় পর্যবসিত হয়েছে। নীরিক্ষা সবসময় ভাল জিনিস। কিন্তু নীরিক্ষা যখন অক্ষা পায় তখন বিপত্তি ঘঠে।
যেমন ‘হাতের অতি কাছে পেয়েও মৃতসূর্য নিশ্বাসে মাখিনি’ সদ্যবিবাহিত মৃত্যু, নিখোঁজ ইশ্বরের ছেলেমেয়ে, প্রতিবার আত্মহত্যার পর আমার মন খুব খারাপ থাকে।
অথবা
না পেয়ে আমাকে
খুন করে গেলে আমার ছায়াকে।
ডেটলের গন্ধে কেবল মৃতদের ঘুম আসে না
যেমন মরা মানুষের পাসপোর্ট থাকে না
ধানখেতে ডিমচাদ, সহিংস ইলিশ, বিধবা অন্ধকার, এটা একটা চোরাফাদের মতো।
শব্দগুলো পড়তে কিন্তু খারাপ লাগে না। একবার পড়ে হয়তো বাহও বলা যায়। কিন্তু পরক্ষণে তলিয়ে দেখলেই বুঝা যায় আসলে শব্দগুলো কোনো দৃশ্য বা অর্থ বহন করে না। এগুলোরে হয়তো কোনো সমালোচক পরাবাস্তব বলে আখ্যায়িত করতে পারেন। কিন্তু কথা হচ্ছে কবিতার মাধ্যমে কবিওতো কিছু বলতে চায়। যে শব্দবন্ধের মাধ্যমে কিছুই পাওয়া যায় না তাতো পাঠকের কাছে ব্যর্থতার স্বাদই দেবে অন্য কিছু নয়।
ধরা যাক ধানখেতে ডিমচাদ। চাদকে নিয়া কবিরা বহু প্রকারের উপমা দিয়েছেন। চাদকে কখনো প্রেমিকার মুখ কখনো ঝলাসানো রুটি। এখানে বলা হচ্ছে ডিমচাদ অর্থাৎ ডিমের মত চাদ। চাদ কি আদৌ ডিমের মতো! হতে পারে পৃথিবী থেকে যে চাদকে আমরা দেখি তা সাদা ডিমও সাদা। কিন্তু একটা বস্তু হিসাবে ডিমকে শুধু সাদা বলেই আমরা পাশ কাটাতে পারিনা। ডিম শব্দটা উচ্চারিত হবার সাথে সাথে তাকে কেন্দ্র করে মানবমস্তিস্কে অনেক কিসিমের ব্যবহার্য অনুভুতি শুরু হয়। যেমন ডিম উৎপাদন করে মুরগি, ডিম মানুষের খুব প্রয়োজনীয় ও নিত্য ব্যবহার্য খাদ্য, ডিম থেকে আবার বাচ্চা পয়দা হয়। এইসব ব্যাপারগুলো সহই কিন্তু আমরা ডিম শব্দটা উচ্চারণ করি। কিন্তু চাদ অনেকটা অধরা। চাদ সম্পর্কে আমদের ধারণা এখনো মূর্ত হয়ে ওঠেনি সম্পূর্ণভাবে। সুতরাং ডিমের সাথে চাদের তুলনাটা বিরক্তি ছাড়া কিছুই উৎপাদন করে না। এভাবেই সহিংস ইলিশ। শব্দটা শুনতে ভালই লাগে অনুপ্রাসের কারণে। ছয়টা অক্ষরের তিনটা স দুইটা রসইকার। কিন্তু তলিয়ে দেখলে এটাও একটা বন্ধ্যা উপমা। বরং সহিংস হাঙর বললে ব্যাপারটা অর্থময় হতো। বিধবা অন্ধকারও তাই। শব্দ বা ছন্দের প্রেমে পড়ে অর্থহীন কবিতার ইতিহাস নতুন নয় সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, নজরুল, সুধীন্দ্রনাথ সহ অনেক কবিরাই এই অপকর্ম করেছে।
সরকারের কিছু কিছু কবিতা হয়ে ওঠেছে চিরন্তনবাণীর মতো। যেমন:
নিরক্ষর পিঁপড়ার অহংকার থাকে না
হাতির অহংকারও ভালো নয়
শরীরের ছায়া থেকে বেশি দূরে যাওয়া ভালো নয়
ছায়াকে বেশি কাছে ঘেষতে দেওয়াটাও ভালো নয়
জগতে সবসময় দুইধরনের কবি দেখা যায় যারা ভাল লেখে কিন্তু কম লেখে। আবার আরেক ধরনের কবি আছে যারা প্রচুর লেখে প্রায় ঘোরের ভেতর কিন্তু পানসে অর্থহীন লেখে। কবিতা লেখায় যদি যশোলাভের লোভটা বর্তায় তাহলে কবিতা ক্ষতিগ্রস্থ হতে বাধ্য। যেমন এই বইয়ের কবিতাগুলো বাছাই করার জন্য সরকারের আরো অপেক্ষার প্রয়োজন ছিল। কারণ কবিতা এমন জিনিস যে লিখলাম পড়ল শেষ হয়ে গেল তা তো না। কবিতা সবসময় ঘুরে ঘুরে আসে। চিহিৃত হয়ে যায় সময়ের সাথে সাথে কবিতাও। কবি সব ধরনের অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যেতে পারেন পড়তে পারেন অনেক কিছু। কিন্তু লেখার সময় তার নিজস্ব ম্যাকানিজমে তার অভিজ্ঞতা আর পঠন জারিত হয়। চিরন্তন বাণী পড়ে যদি তা কবিতায় সরাসরি চলে আসে তাহলে কবিকে তো অসাবধানী বলতেই হয়। সরকার আমিনকে অসাবধানী আর অসতর্ক বলতে হয় কারণ নীচের লাইনগুলোর মতো অসাধারণ লাইন যে লিখতে পারে তার দায় কিন্তু অনেক।
সামনে শেতাঙ্গ নদী
যার জলে মুখ ধুতে গিয়ে কিনে এনেছি হাজার মনের অসুখ
অপারেশন টেবিলে শুয়েও
মানুষ ভুলে যায় না সঙ্গমের স্মৃতি
সাধারণ কবিরা স্বেচ্ছাচারি গুরুত্বপূর্ণ কবিরা নৈরাজ্যবাদি। সে ক্ষেত্রে সরকারের সাহস গ্রহণযোগ্য। প্রাণহীন এই বঙ্গকবিতা জমানায় সরকার আমিনের কবিতা পড়া যায়। শব্দে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করবার কায়দা সরকার জানে। তাই উচ্চমাত্রার স্বেচাচারিতাকে আসা করা যায় তিনি বিবেচনাবোধে ঠাই দিতে পারবেন। সরকার আমিনের আরো চমৎকার কবিতা আমরা পড়তে চাই। সরকারের আমিন হওয়া থেকে তিনি নিজেই নিজেকে উদ্ধার করবেন। এখানে অন্যরা বেকুব। কারণ কবিতা খুব নি:সঙ্গ ব্যবসা, একজন এর উৎপাদনকারি আর বাকী পৃথিবী ভোক্তা।
বইয়ের দোকান থেকে ডাউনলোড করুন সরকার আমিনের কবিতার বই বিবাহিত প্রেমের কবিতা।
ফরাসিতে তখন গিয়ঁম আপলিনের নেতৃত্বে আঁভ গার্দ কবিতার ঢেউ। আপলিন ও রবার্ট ডেলনের বাসাতে চলতো তখনকার কবিতা পাঠের আসর। নিয়মিত আসর জমাচ্ছেন ম্যাকস জাকব, আঁদ্রে সালমঁরা। তারাই তখন সমকালীণ ফরাসি কবিতার অগ্রদূত। সেদিন কবিতা পড়বেন এক নবাগত কবি। নাম তার ব্লেইজ সঁদ্রার। ভাষা ফরাসি হলেও সুইস। আপাদমস্তক ভবঘুরে। সিনিয়রদের সম্পর্কে পুরামাত্রায় শ্রদ্ধাহীন, কবিতার যাবতীয় প্রচলিত ধারণার বিরুদ্ধে স্বোচ্ছার। সিনেমা দেখেন প্রচুর সেখান থেকেই উদ্দিপনা পান খানিকটা। মুখে ‘ইনার পোয়েট্রি’র তুফান। রাশিয়া আমেরিকা ঘুরে এই প্রথম পারিতে পা। কবিতা পড়বার আগে কবিতাকে কবিতামুক্ত ও সাধারণ শব্দের ব্যবহার সম্পর্কে তার নতুন আইডিয়া শোনে ডেলন মন্তব্য করেন ‘তুমিতো মিয়া সেই পুরানা ধারণার গায়েই টেকনিকের জামা পরাইতে চাইতেছো’।
সঁদ্রার রেগে গিয়ে বলেন ‘তোমরা মিয়া আধুনিকরা শোনো। ইমেজ আর ইমাজিনেশানের বন্ধ্যাত্বের ভেতর কবিতারে হত্যা করতে চাচ্ছো। যতক্ষণ না এ সমস্ত ধার করা জিনিস ফাটিয়ে না দিচ্ছো ততক্ষণ নতুন কবিতা সম্ভব না।
কবিতা পড়ছে সদ্রার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘরে শ্রোতাদের ভেতর চাপা উত্তেজনা। সবাই বুঝতে পারছে কী ধুন্ধুমার কান্ড ঘঠতে যাচ্ছে কবিতায়। প্রচলিত শব্দে কি এক স্পন্দন। আপলিন বুঝতে পারলেন নতুন কবিতা কাকে বলে। তাদের নতুন কবিতা আন্দোলনের পিছনেও নতুন কবিতা আছে তাহলে?
সঁদ্রারের কবিতায় রাস্তাঘাট, সড়কে নাম, শর্ট হ্যা- টাইপিস্ট, সংবাদপত্র, সাইনবোট, নেম প্লেটস, নোটিস সবকিছু ঢুকে আছে। এবং এত জীবন্তভাবে যা একমাত্র সদ্রারের দ্বারাই সম্ভব। কবিতা পড়া শেষ হলে আপলিন জড়িয়ে ধরলেন সদ্রারকে বুকের মাঝে। অনেকটা ঠাট্টার ছলে আঁদ্রে সালমঁ বললেন ‘যেন একটা ঠা-া সিদ্ধ আলু। কথা বলতে উস্তাদ। রেলওয়ে-টাইম টেবল বা গাইডবুক তার হাতে বদলে হয়ে ওঠে মর্মস্পর্শী কবিতা।
সরকার আমিনের কবিতা পড়ে ব্লেইজ সঁদ্রারের কথা মনে পড়ার কারণ তার বইয়ের নাম হয় ‘চার পাঁচ হাজার পিঁপড়ার দু:খ’ ‘ব্লেড দিয়ে কেটেছিলে জল’ ‘আত্মহত্যার পরিবর্তে ১ কাপ চা খাও’ ‘সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ’ ইত্যাদি।
সরকার আমিনের কবিতা বিচ্ছিন্নভাবে অনেক পড়েছি। অনেক কবিতা ভাল লাগে। আবার অনেক কবিতা সম্পর্কে প্রশ্নজাগে।
চার পাঁচ হাজার পিঁপড়ার দু:খ’ বইতে ‘সম্ভ্রান্ত ইঁদুর’ ‘রাগে তোমার বাড়ি’ ‘স্নান করে দেখি’ স্কচ টেপ দিয়ে হৃদয়ের মুখ বন্ধ করা যায় না’ ‘আমি কোথায়?’ কবিতাগুলো মহিমাবিস্তারকারি।
ঘাষ জানে মাটির মাতৃ পরিচয়। ঘাসের মধ্যে হৃদয় ইচ্ছা করলে লুকিয়ে রাখা যায়।
................................
ইচ্ছা করলে চিরকাল বেঁেচ থাকা যায়
তবে তার জন্য কিছুকাল ঘাসের ভেতর লুকিয়ে থাকতে হয়
অথবা ছোট গর্তে স্বল্পকাল হতে হয় সম্ভান্ত্র ইঁদুর। (সম্ভ্রান্ত ইঁদুর)
কবিতাটির মহিমা দুই কারণে প্রথমত ইঁদুরকে আমরা এক মহাধূরন্ধর প্রাণী বলেই জানি। আবার গর্তে ধ্যান করে প্রায় মহামানবরা অমর হয়েছেন। সত্য এবং স্যাটায়ারের মিলনে বিষয়ের গুরুত্ব কমেনি।
রাগে তোমার বাড়ি কবিতাটার বিষয় নিয়া অহরহ কবিতা লেখা হয়েছে। সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী অসংখ্য কবিতাই শেষ পর্যন্ত সেøাগানে পরিণত হয়েছে। এই কবিতাটার যাত্রা কেন্দ্র থেকে। যে কেন্দ্রের ব্যাস একটা পৃথিবীর সমান। কবি হৃদয়ের বহন ক্ষমতা অসীম। তাবৎ জাহানই সে বয়ে বেড়ায় প্রায় নিজের অজান্তে। কিন্তু তবুও শিকার মনোবৃত্তি বা আর কমপ্লেক্সের জটিলতা কবি হৃদয়কে ছিন্নভিন্ন করে ফেলে।
এই যুদ্ধ আমার একার পক্ষে বহন করা বেশ কষ্টের
ধার করতে চাই একটি শক্তিশালী হৃদপি-
যে পাম্প করতে জানে, থামতে জানে না।
কবি তাদেউস রোদেভিস বলেছিলেন আউৎসভিৎজের পর আর কবিতা হয় না। কবি হৃদয় মানতে না পারলেও সবসময় এইভাবে ডারউইনিয় পদ্ধতিইে চলছে প্রাণী জগত। এক দিকে যুদ্ধ অন্যদিকে অগ্রগতি।
ইরাকে রক্তপাতের পরও জাপানের সূর্য
উদিত হতে লজ্জা পায়না।
যুদ্ধ আর অগ্রগতি অসমতা না সমতা সেটা নিয়ে তর্ক মানবজাতির পতন পর্যন্ত শেষ হবে বলে মনে হয় না। আর তাই
আমার মন
মসলার মতো পিষে যাচ্ছে বন্ধুগণ
রাগে তোমার বাড়ি গুড়িয়ে দিতে ইচ্ছা করে ও আমার শ্বেতাঙ্গিনী বন্ধু
‘শ্বেতাঙ্গিনী বন্ধু’ সিম্বল ধরে যদি এগোই তবে একথা বলা যায় যে প্রথম দুুনিয়ার অধিবাসিরাতো প্রায় ধলা। বর্ণবাদের পিছনে যেমন শ্বেতাঙ্গ অন্ধকার জড়িত আবার পুঁজিবাদি সমাজ ব্যবস্থার সাথেও শ্বেতাঙ্গরাই জড়িত। সেক্ষেত্রে বর্ণবাদ আর পুঁজিবাদের খুব দূরত্ব নাই।
এরপর আমরা কবির প্লাটফর্ম বা অবস্থান সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা পাই
লাদেনের মতো নিষ্ঠুর হতে আমার আর বাকি নেই।
এখনো এই সন্দেহের বাইরে আমরা যেতে পারি নাই যে লাদেন বলে আদৌ কেউ কি আছে। যে পশ্চিমাদের বোমা আর গুলি বৃষ্টি উপেক্ষা করে তেলাপোকার মত আফগানিস্তানের পাহাড়ে বা ঝোরায় লুকিয়ে বেচে আছে। যে লোকটার ছবি মিডিয়ায় লাদেন বলে প্রচারিত সে কি আসলে লাদেন না অন্যকেউ। মধ্য এশিয়ার একচ্ছত্র আধিপত্যের জন্য পশ্চিমাদের দরকার ছিল ভয়ংকর শত্রু। তারা হতাশ যে তাদের কোনো ভয়ংকর শত্রু নাই। সমস্যা নাই আছে ঢাকডোল মিডিয়া। পশ্চিমা গণমাধ্যম এমন কাল্পনিক শত্রু সাদ্দামকে সৃষ্টি করল। যার হাছিতে পারমানবিক বিস্ফোরণ ঘঠবে। ঠিক লাদেনও একটা নাম সিম্বল। লাদেন নামের কোনো দেহের অস্তিত্বই দরকার নাই। দরকার শুধু এই নামটা যা কখনো মরবে না। মাঝে মাঝে ভিডিও ফুটেজ পাঠিয়ে পশ্চিমাদের নিশ্চিহ্ন করার হুমকি দেবে। যাইহোক এই বিনম্র কবিতাটা রাজনৈতিক কবিতা হয়েও চিরস্থায়ী মননশীল মানুষের হৃদয়কে প্রষ্ফুটিত করতে পেরেছে।
স্নান করে এসে দেখি
সমুদ্র অনেক কিলোমিটার দূরের ব্যাপার
ভিজে গেলেই সাঁতার হয় না (স্নান করে দেখি)
অথবা
টেবিলে সাজানো ছিল নানা পদের জীবন
বেছে নিতে বলা হলে
শেষ পর্যন্ত মৌনই থেকে গেছি (স্কচ টেপ দিয়ে হৃদয়ের মুখ বন্ধ করা যায় না)
অথবা
শীতে কাঁপছি।
কাতার কুয়াশা, সামনে বরফের সাঁকো
অনুমানই একমাত্র যানবাহন
আমি আন্তরিক আগুনের খোঁজে গেছি
আশেপাশের গ্রামে। (আমি কোথায়?)
ইত্যাদি ঋজু অথচ প্রায় লক্ষ্যভেদি লাইনগুলো হয়ে ওঠেছে অসামান্য কবিতা। কবিতাগুলো আত্মায় যেন মলম দেয়। শান্ত করে। সরকার আমিনের বলার কায়দাটা তরঙ্গের দোলার মতো। তিনি উচ্ছকণ্ঠি নন কিন্তু লক্ষ্যভেদি।
যাইহোক সার্বিকভাবে কবিতা যা দেখায় সিম্বল বা ইমেজের মাধ্যমে বিমূর্ত বা মূর্ত বস্তুর সাথে তা যদি সঠিক প্রতিতুলনা না ঘঠাতে পারে তাহলে কবিতা হিসাবে তা ব্যর্থ হতে বাধ্য। কারন ততক্ষণে ইমেজ আটকে গেছে বন্ধ্যাত্বের জটিলতায়। যেমন ‘তরমুজ মদ’ যখন বলা হয়। আমরা জানি মদের রঙ লাল হতে পারে। আর তরমুজকেও মদের মত তরল করে খাওয়া যায়। ফলে ইমেজটা নিতে আমাদের অসুবিধা হয় না বরং আমরা আনন্দিত হয়ে ওঠি এই প্রতিতুলনায়।
সরকারের এই বইতে বন্ধ্যা ইমেজের কারণে অনেক কবিতা বলা যায় অর্থহীনতায় পর্যবসিত হয়েছে। নীরিক্ষা সবসময় ভাল জিনিস। কিন্তু নীরিক্ষা যখন অক্ষা পায় তখন বিপত্তি ঘঠে।
যেমন ‘হাতের অতি কাছে পেয়েও মৃতসূর্য নিশ্বাসে মাখিনি’ সদ্যবিবাহিত মৃত্যু, নিখোঁজ ইশ্বরের ছেলেমেয়ে, প্রতিবার আত্মহত্যার পর আমার মন খুব খারাপ থাকে।
অথবা
না পেয়ে আমাকে
খুন করে গেলে আমার ছায়াকে।
ডেটলের গন্ধে কেবল মৃতদের ঘুম আসে না
যেমন মরা মানুষের পাসপোর্ট থাকে না
ধানখেতে ডিমচাদ, সহিংস ইলিশ, বিধবা অন্ধকার, এটা একটা চোরাফাদের মতো।
শব্দগুলো পড়তে কিন্তু খারাপ লাগে না। একবার পড়ে হয়তো বাহও বলা যায়। কিন্তু পরক্ষণে তলিয়ে দেখলেই বুঝা যায় আসলে শব্দগুলো কোনো দৃশ্য বা অর্থ বহন করে না। এগুলোরে হয়তো কোনো সমালোচক পরাবাস্তব বলে আখ্যায়িত করতে পারেন। কিন্তু কথা হচ্ছে কবিতার মাধ্যমে কবিওতো কিছু বলতে চায়। যে শব্দবন্ধের মাধ্যমে কিছুই পাওয়া যায় না তাতো পাঠকের কাছে ব্যর্থতার স্বাদই দেবে অন্য কিছু নয়।
ধরা যাক ধানখেতে ডিমচাদ। চাদকে নিয়া কবিরা বহু প্রকারের উপমা দিয়েছেন। চাদকে কখনো প্রেমিকার মুখ কখনো ঝলাসানো রুটি। এখানে বলা হচ্ছে ডিমচাদ অর্থাৎ ডিমের মত চাদ। চাদ কি আদৌ ডিমের মতো! হতে পারে পৃথিবী থেকে যে চাদকে আমরা দেখি তা সাদা ডিমও সাদা। কিন্তু একটা বস্তু হিসাবে ডিমকে শুধু সাদা বলেই আমরা পাশ কাটাতে পারিনা। ডিম শব্দটা উচ্চারিত হবার সাথে সাথে তাকে কেন্দ্র করে মানবমস্তিস্কে অনেক কিসিমের ব্যবহার্য অনুভুতি শুরু হয়। যেমন ডিম উৎপাদন করে মুরগি, ডিম মানুষের খুব প্রয়োজনীয় ও নিত্য ব্যবহার্য খাদ্য, ডিম থেকে আবার বাচ্চা পয়দা হয়। এইসব ব্যাপারগুলো সহই কিন্তু আমরা ডিম শব্দটা উচ্চারণ করি। কিন্তু চাদ অনেকটা অধরা। চাদ সম্পর্কে আমদের ধারণা এখনো মূর্ত হয়ে ওঠেনি সম্পূর্ণভাবে। সুতরাং ডিমের সাথে চাদের তুলনাটা বিরক্তি ছাড়া কিছুই উৎপাদন করে না। এভাবেই সহিংস ইলিশ। শব্দটা শুনতে ভালই লাগে অনুপ্রাসের কারণে। ছয়টা অক্ষরের তিনটা স দুইটা রসইকার। কিন্তু তলিয়ে দেখলে এটাও একটা বন্ধ্যা উপমা। বরং সহিংস হাঙর বললে ব্যাপারটা অর্থময় হতো। বিধবা অন্ধকারও তাই। শব্দ বা ছন্দের প্রেমে পড়ে অর্থহীন কবিতার ইতিহাস নতুন নয় সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, নজরুল, সুধীন্দ্রনাথ সহ অনেক কবিরাই এই অপকর্ম করেছে।
সরকারের কিছু কিছু কবিতা হয়ে ওঠেছে চিরন্তনবাণীর মতো। যেমন:
নিরক্ষর পিঁপড়ার অহংকার থাকে না
হাতির অহংকারও ভালো নয়
শরীরের ছায়া থেকে বেশি দূরে যাওয়া ভালো নয়
ছায়াকে বেশি কাছে ঘেষতে দেওয়াটাও ভালো নয়
জগতে সবসময় দুইধরনের কবি দেখা যায় যারা ভাল লেখে কিন্তু কম লেখে। আবার আরেক ধরনের কবি আছে যারা প্রচুর লেখে প্রায় ঘোরের ভেতর কিন্তু পানসে অর্থহীন লেখে। কবিতা লেখায় যদি যশোলাভের লোভটা বর্তায় তাহলে কবিতা ক্ষতিগ্রস্থ হতে বাধ্য। যেমন এই বইয়ের কবিতাগুলো বাছাই করার জন্য সরকারের আরো অপেক্ষার প্রয়োজন ছিল। কারণ কবিতা এমন জিনিস যে লিখলাম পড়ল শেষ হয়ে গেল তা তো না। কবিতা সবসময় ঘুরে ঘুরে আসে। চিহিৃত হয়ে যায় সময়ের সাথে সাথে কবিতাও। কবি সব ধরনের অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যেতে পারেন পড়তে পারেন অনেক কিছু। কিন্তু লেখার সময় তার নিজস্ব ম্যাকানিজমে তার অভিজ্ঞতা আর পঠন জারিত হয়। চিরন্তন বাণী পড়ে যদি তা কবিতায় সরাসরি চলে আসে তাহলে কবিকে তো অসাবধানী বলতেই হয়। সরকার আমিনকে অসাবধানী আর অসতর্ক বলতে হয় কারণ নীচের লাইনগুলোর মতো অসাধারণ লাইন যে লিখতে পারে তার দায় কিন্তু অনেক।
সামনে শেতাঙ্গ নদী
যার জলে মুখ ধুতে গিয়ে কিনে এনেছি হাজার মনের অসুখ
অপারেশন টেবিলে শুয়েও
মানুষ ভুলে যায় না সঙ্গমের স্মৃতি
সাধারণ কবিরা স্বেচ্ছাচারি গুরুত্বপূর্ণ কবিরা নৈরাজ্যবাদি। সে ক্ষেত্রে সরকারের সাহস গ্রহণযোগ্য। প্রাণহীন এই বঙ্গকবিতা জমানায় সরকার আমিনের কবিতা পড়া যায়। শব্দে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করবার কায়দা সরকার জানে। তাই উচ্চমাত্রার স্বেচাচারিতাকে আসা করা যায় তিনি বিবেচনাবোধে ঠাই দিতে পারবেন। সরকার আমিনের আরো চমৎকার কবিতা আমরা পড়তে চাই। সরকারের আমিন হওয়া থেকে তিনি নিজেই নিজেকে উদ্ধার করবেন। এখানে অন্যরা বেকুব। কারণ কবিতা খুব নি:সঙ্গ ব্যবসা, একজন এর উৎপাদনকারি আর বাকী পৃথিবী ভোক্তা।
বইয়ের দোকান থেকে ডাউনলোড করুন সরকার আমিনের কবিতার বই বিবাহিত প্রেমের কবিতা।